কী বিচিত্র রাতের আকাশ! সুদূর আকাশের প্রতিটি বস্ত্ত তার অপার সৌন্দর্য্য নিয়ে আমাদেরকে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ঘন ঘোর অন্ধকারকে তুচ্ছ করে চাঁদ বিলিয়ে যাচ্ছে তার শুভ্র আলো। অজস্র নক্ষত্র মিটিমিটি করে জ্বলছে আর আমরা তা দেখে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হচ্ছি। আমাদের পৃথিবী থেকে সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র হচ্ছে সূর্য। যা আমাদের পৃথিবীর তুলনায় ১৩ লক্ষগুণ বড়। অবাক হচ্ছেন! আরো অবাক করার মত তথ্য হচ্ছে এই সূর্য থেকেও শতগুণ বড় হাজার হাজার নক্ষত্র এই মহাবিশ্বে বিদ্যমান রয়েছে। মজার ব্যাপার হল এই কোটি কোটি নক্ষত্র গুলো মহাকাশে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকে না বরং তারা প্রত্যেকেই এক একটি গ্যালাক্সির সদস্য। এ জন্যে গ্যালাক্সিকে বলা হয় নক্ষত্রের শহর।
প্রত্যেকটি গ্যালাক্সিতে হাজার হাজার কোটি নক্ষত্র অবস্থান করে। আমাদের গ্যালাক্সীর নাম মিলকি ওয়ে (Milky Way)। এতে সূর্যের মত প্রায় বিশ হাজার কোটি নক্ষত্র বিদ্যমান। আমাদের পার্শ্ববর্তী নিকটতম গ্যালাক্সির নাম এন্ড্রোমিডা (Andromida)। তার মধ্যে নক্ষত্রের সংখ্যা ত্রিশ হাজার কোটি। এবার চিন্তা করুন এক একটি গ্যালাক্সি কতটুকু বিশাল ও বিস্তৃত। এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল বস্ত্ত হচ্ছে আলো। যা এক সেকেন্ডে ১,৮৬০০০ মাইল পথ অতিক্রম করতে পারে। সেই আলোর গতি নিয়ে তুলনামূলক ছোট শুধুমাত্র একটি গ্যালাক্সি পরিভ্রমন করতে এক লক্ষ বছর সময় লেগে যাবে। আর আমাদের নিকটতম গ্যালাক্সী ‘এন্ড্রোমিডা’ আলোর গতিতে যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে সময় লাগবে দেড় লক্ষ বছর। এত বিরাট তার আয়তন কল্পনা করতেও জ্ঞান আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। যদিও অন্যান্য গ্যালাক্সীদের তুলনায় এটি সাদামাটা অতি তুচ্ছ প্রকৃতির গ্যালাক্সী। একটি গ্যালাক্সি থেকে অন্য গ্যালাক্সীর দূরত্ব মিলিয়ন মিলিয়ন আলোক বর্ষ। আমাদের গ্যালাক্সী মিলকি ওয়ে থেকে নিকটতম গ্যালাক্সি এন্ড্রোমিডা এর দূরত্ব ২.২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ অর্থাৎ আলোর গতিতে আমাদের গ্যালাক্সি থেকে ঐ গ্যালাক্সিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে ২২ লক্ষ বছর। এবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মহাবিশ্বে মোট গ্যালাক্সির সংখ্যা কত? এর সঠিক উত্তর কারো জানা নেই। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগেও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশাল মহাবিশ্বের তুলনায় যে সামান্য অংশ পর্যবেক্ষণ করতে সমর্থ হয়েছি। সেখানে প্রায় ৫০০ কোটি গ্যালাক্সির সন্ধান পাওয়া গেছে। তাই গোটা মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা কত বা এই মহাবিশ্বের মোট আয়তনই বা কত তা চিন্তা করার মত সক্ষমতাও আমাদের নেই। এবার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে এই বিশাল মহাবিশ্বের কি কোনো স্রষ্টা আছেন নাকি তা আপনা আপনি স্বত:স্ফুর্তভাবে সৃষ্টি হয়েছে? প্রকৃত পক্ষে বিজ্ঞানের কাছে এর উত্তর হচ্ছে এই বিশাল মহাবিশ্ব তো দূরের কথা বরং এই মহাবিশ্বের অতি ক্ষুদ্রতম উপাদান অণু (যা খালি চোখে দেখা যায় না) ও আপনা আপনি স্বর্ত:র্স্ফুত ভাবে সৃষ্টি হতে পারে না। আর বিজ্ঞানের এই বক্তব্য প্রমাণ করার জন্যে শুধুমাত্র একটি উদাহরণই যথেষ্ট। সকল জ্যান্ত জীবকোষের বেঁচে থাকার অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে আমিষ (Protein) । এই আমিষ অণু হাইড্রোজেন, কার্বণ, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও সালফার পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। এই পাঁচটি মৌলিক উপাদান নিজে নিজে একত্রে মিলিত হয়ে আমিষ অণু তৈরির সুযোগ কতটা আছে তা হিসাব করে দেখা যেতে পারে। সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত গণিতবিদ চার্লস ইডজিন হিসেব করে আবিস্কার করেছেন যে, এরকম সুযোগ ১০ ১৬০ (১০ লিখে ১৬০টি শুন্য বসালে যে বিরাট সংখ্যা হবে) বারের মাঝে একবার আর এতে সময় লাগবে ১০ ২৪৩ বছর। অর্থাৎ ১০ এর পিঠে ২৪৩ শুন্য বসালে যে অকল্পনীয় বিরাট সংখ্যা পাওয়া যাবে ঠিক তত বৎসর। অথচ আমাদের দেহে প্রতি মুহুর্তে আমিষ উপাদান সৃষ্টি হচ্ছে। আর যে প্রক্রিয়ায় এই উপাদান গুলো একত্রে সন্নিবেশিত হচ্ছে তাতে একটুখানি ব্যতিক্রম হলেই তা বিষ (Pioson) তুল্য হয়ে যাবে এবং জীবন রক্ষা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হবে। এজন্যে অধ্যাপক জে বি ল্যাথস বলেছেন-‘আমিষ উপাদানের ১টি মাত্র অনু সৃষ্টি করার জন্যে এইসব সুযোগের যুগপৎ মিলন ঘটানো সম্পূর্ণভাবেই অসম্ভব। সুতরাং যেখানে অতিক্ষুদ্র ১টি অণুও আপনা আপনি সৃষ্টি হতে পারে না সেখানে এই বিশাল বিস্তৃত মহাবিশ্ব আপনা আপনি স্বত:স্ফুর্তভাবে সৃষ্টি হয়েছে এমন দাবী করা শুধু বোকামিই নয় হাস্যকরও বটে। এজন্যে বড় বড় প্রায় সকল বিজ্ঞানীরাই স্রষ্টার অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী লর্ড কেনভীন বলেছেন- ‘আপনি যদি খুব গভীরভাবে কিন্তা করেন, তাহলে বিজ্ঞান আপনাকে স্রষ্টার অস্তিত্ব স্বীকার করাতে বাধ্য করবে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী স্যার আলর্বাট আইনস্টাইন স্রষ্টার প্রতি এতটাই বিশ্বাসি ছিলেন যে, তিনি ঘোষণা করেছিলেন- ‘ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ’। বিশ্ব বিখ্যাত রসায়নবিদ ও পদার্থ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে যিনি সারা জীবন স্রষ্টাকে অস্কীকার করে এসেছিলেন। যখন তিনি মৃত্যু শয্যায় তখন তার এক সহকর্মী তাকে প্রশ্ন করেছিলেন স্রষ্টা সম্পর্কে এখন তোমার ধারণা কী? মৃত্যু পথযাত্রী ফ্যারাডে প্রশ্নটি পুনরাবৃত্তি করে বললেন ধারণা? না আমার আর কোনো ধারণা নেই, স্রষ্টাকে অশেষ ধন্যবাদ, আমাকে আর কোনো ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করতে হবে না। আমি কাকে বিশ্বাস করতাম তা জানতে পেরেছি। বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও দার্শনিক ফ্রান্সিস রেকন যথার্থই বলেছিলেন- সামান্য দর্শন জ্ঞান মানুষকে নাস্তিকতার দিকে ঠেলে দেয় আর গভীর দর্শন জ্ঞান মানুষকে আস্তিক বানায়? এতক্ষণের আলোচনায় নিশ্চয় আমাদের কাছে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যেভাবেই হোক মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছেন যিনি তার একক ক্ষমতা বলে সৃষ্টি করেছেন এই বিশাল বিস্তৃত সুশৃঙ্খল মহাবিশ্ব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে-কে এই মহান স্রষ্টা? আপাত দৃষ্টিতে প্রশ্নটি অনেক জটিল মনে হলেও এর উত্তর বের করতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। যে কোনো বিশ্বাসে বিশ্বাসী লোকই যদি অত্যন্ত খোলা মন নিয়ে বলেন তবে আমার ধারণা তার সামনে খুলে যাবে মহাসত্যের দুয়ার খুঁজে পাবে তার প্রকৃত স্রষ্টাকে। মূলত ১৮৮০ সালের পর থেকে আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা শুরু হলেও তা ত্যাপকতা লাভ করে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে। কিন্তু তখনো মহাকাশ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা তেমন কিছুই জানতেন না, কারণ তখনো টেলিস্কোপ (Telescope) আবিষ্কার হয়নি। ১৯২০ সালে ইডুইন হাবেল টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন। এজন্যে তখনো সবাই মহাকাশ বলতে আমাদের সৌরজগৎ সহ খালি চোখে দেখা যায় এই নগণ্য আকাশকেই মনে করতো। এর বেশি কল্পনাও করতে পারতো না। শুধু কি মহাকাশ বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখাতেই মানুষের জ্ঞান ছিল আজকের তুলনায় অতি নগণ্য। আজ হতে মাত্র এক থেকে দেড় শত বছর পূর্বে যদি বিজ্ঞান সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের অবস্থা হয় এতটাই নাজুক তবে চিন্তা করুন আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে বিজ্ঞান সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান কতটা সীমাবদ্ধ ছিল। থাকবেই বা কী করে? তখনকার যুগতো বিজ্ঞানের যুগ ছিল না, তখনকার যুগ ছিল জমাট বাধা অন্ধকার ও কুসংস্কারের যুগ। গোটা মানব সম্প্রদায় নানাবিধ কুসংস্কারে আছন্ন ছিল। কিন্তু অবাক করার মত বিষয় হচ্ছে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে অন্ধকার অনুন্নত, জ্ঞানের আলোহীন পরিবেশে আরব মরুর বুকে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রিয় বাণী বাহকের কাছে অবতীর্ণ করলেন এমন কিছু বাণী যার মাধ্যমে সেই কুসংস্কার আছন্ন যুগেই পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে মানব জাতিকে জানিয়ে দিলেন গ্যালাক্সী সম্পর্কে। আরো জানালেন বিগ ব্যাংগ থিওরী, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, Cosomic String, অভিকর্ষবল, ব্ল্যাকহোল, সম্প্রসারণ শীল মহাবিশ্ব, গ্যালাক্সিদের পশ্চাদ মুখিবেগ সম্পর্কে।
এভাবে আরো শ’খানেক বিষয়ে উদাহরণ আছে। উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে পবিত্র কুরআনই যে মানব জাতিকে সর্বপ্রথম ধারণা দিয়েছে এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করার জন্যে এবং এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষনের সমস্ত পথ বন্ধ করে দেয়ার জন্যে উক্ত বিষয়গুলো পবিত্র কুরআনের যে সূরার যে আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তা যথাক্রমে তুলে ধরছি। ২৫নং সূরার ৬১নং আয়াতে, ২১নং সূরার ৩০নং আয়াতে, ৩৫ নং সূরার ৪১নং আয়াতে, ৫১নং সূরার ৭নং আয়াতে, ৭৯নং সূরার ১নং আয়াতে, ৫৬নং সূরার ৭৫ ও ৭৬ নং আয়াতে, ৫১ সূরার ৪৭নং আয়াতে এবং ৫৭নং সূরার ৪নং আয়াতে এসব বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। একবার চিন্তা করুন যেখানে আজ হতে এক থেকে দেড় শত বছর পূর্বে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষ কল্পনাও করতে পারতো না সেখানে আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে কিভাবে ১টি গ্রন্থে সুস্পষ্টভাবে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হল? নিঃসন্দেহে এর রচয়িতা মহান স্রষ্টা নিজেই। একথা বলারও কোনো সুযোগ নেই যে অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থের মত পবিত্র কুরআনকে কেউ পরিবর্তন করে এই বিষয়গুলো সংযোজন করেছে। কারণ দেড় হাজার বছর পূর্বে যখন কুরআন নাজিল হয় ঠিক সেই সময়কার হাতে লিখা কুরআনের কপির সাথে বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কুরআনের চুল পরিমাণ পার্থক্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হচ্ছে ইরান ও সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত যাদুঘর। ভবিষ্যতেও কুরআন পরিবর্তন এর কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ যা প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মুখস্থ করে তাদের স্মৃতিপাট সংরক্ষণ করে রাখেন। তাছাড়া স্বয়ং স্রষ্টাই তো এর সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে আমাদের কাছে এখন একথা প্রমাণিত সত্য যে, কুরআনই একমাত্র অবিকৃত ঐশী বাণী। ফলে কুরআনের সাথে সাথে কুরআন অবতীর্ণ কারী হিসেবে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাববুল আলামিনের অস্তিত্বও দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে পড়েছে, যা অস্বীকার করার পথ কার্যত মানব সম্প্রদায় এর জন্যে রুদ্ধ হয়ে গেছে। যারা মহান স্রষ্টা আল্লাহ রাববুল আলামিনে বিশ্বাস করেন তাদের একথা ভেবে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই যে, এত স্বচ্ছ সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও অনেক মানুষ কেন নাস্তিকতা কিংবা মিথ্যা স্রষ্টার বৃথা উপাসনা করে? সব সময় মনে রাখবেন-মিথ্যা আছে বলেই তো সত্যের এত দাম, অন্ধকার আছে বলেই তো আলোর কদর এত বেশি, নাস্তিক ও মিথ্যা স্রষ্টায় বিশ্বাসী লোক আছে বলেই তো মহান স্রষ্টা আল্লাহ রাববুল আলামিনে বিশ্বাসী লোকদের জন্য রয়েছে আকাশ ও জমিনের মত বিস্তৃত জান্নাত। তাইতো আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেন- ‘ হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় করার মত ভয় কর এবং মুসলিম হওয়ার আগেই যেন তোমাদের মৃত্যু না আসে। তাই আসুন অবনত মস্তকে স্রষ্টা আল্লাহ রাববুল আলামিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিই। এবং বাকি জীবনটুকু তার নির্দেশ অনুসারে পরিচালিত করি। আর ঐ পথহারা দিকহারা মানুষের সামনে তুলে ধরি মহাসত্যের বাণী। দেখবেন সত্য যখন আগমন করে মিথ্যা তখন করে প্রস্থান, যেমনিভাবে আলোর আগমনে অন্ধকার হয়ে যায় অদৃশ্য।
|
Thursday, 29 January 2015
নক্ষত্রের শহর গ্যালাক্সি ও স্রষ্টার অস্তিত্ব
Subscribe to:
Comments (Atom)

